You are currently viewing উম্মতে মোহাম্মদী কেন, স্বদেশ ছেড়ে বহির্গত হয়েছিলো?
জিহাদ আত্মরক্ষা মূলক নয়

উম্মতে মোহাম্মদী কেন, স্বদেশ ছেড়ে বহির্গত হয়েছিলো?

উম্মতে মোহাম্মদী কেন, স্বদেশ ছেড়ে বহির্গত হয়েছিলো?

আজ যদি কোন কমিউনিস্টকে প্রশ্ন করা যায় যে, তোমরা পৃথিবীময় সংগ্রাম করছো, বহু কোরবানী কোরেছো, কমিউনিজমকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম করছো, এসব কেন করছো? ঐ কমিউনিস্ট অবশ্যই জবাব দেবেন যে, পৃথিবীতে যে অর্থনেতিক ব্যবস্থা চালু আছে সেটার পরিণাম হোচ্ছে অর্থনৈতিক অবিচার, শোষণ, অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্ট। কাজেই সেটাকে ভেঙ্গে সেখানে কমিউনিজম চালু করলে সম্পদ সুষ্ঠু বণ্টন হবে, মানুষ খেয়ে পরে বাঁচবে এবং মানুষের ঐ কল্যাণের জন্য পৃথিবীময় কমিউনিস্টরা নিজেদের সব কিছু উৎসর্গ কোরে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন- অর্থাৎ মানুষের কল্যাণের জন্য তারা নিজেদের উৎসর্গ কোরেছেন। ঠিক ঐ কারণেই অর্থাৎ মানব জাতির বৃহত্তর কল্যাণের জন্য বিশ্বনবীর (সা:) সৃষ্ট জাতি পার্থিব সব কিছু ত্যাগ কোরে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। শুধু তফাৎ এই যে, কমিউনিস্টরা যে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা কোরতে সংগ্রাম কোরছে তা মানুষের তৈরী যা শান্তি, ইসলাম আনতে পারবে না, আরও অশান্তি সৃষ্টি হবে। আর বিশ্বনবীর (সা:) জাতি, উম্মতে মোহাম্মদী যে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা কোরতে সংগ্রাম কোরেছিলেন সে ব্যবস্থা হলো স্বয়ং স্রষ্টার তৈরী ব্যবস্থা, দ্বিতীয় তফাৎ হলো মানুষের তৈরী বোলে কমিউনিজম মানুষের শুধু অর্থনৈতিক মুক্তির একটা ব্যবস্থা তৈরী কোরেছে। মানুষের জীবনের অন্যান্য দিক সম্বন্ধে ওটার কোন বক্তব্য নেই। কিন্তু মানুষ শুধু দেহ নয় আত্মাও, শুধু জড় নয় আধ্যাত্মিকও। পক্ষান্তরে আল্লাহ যে জীবন ব্যবস্থা দিয়েছেন তা মানুষের দেহের ও আত্মার প্রয়োজনের নিখুঁত সংমিশ্রণ। এই ভারসাম্যযুক্ত জীবন ব্যবস্থাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা কোরে মানব জাতির মধ্যে শান্তি, ইসলাম আনয়ন করাই হোচ্ছে একমাত্র উদ্দেশ্য, যে জন্য আল্লাহ তার শ্রেষ্ঠ ও শেষ নবীকে (সা:) পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। যে কাজ এক জীবনে সমাপ্ত করা অসম্ভব, সে কাজের ভিত্তি তিনি স্থাপন কোরলেন সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে সমগ্র আরব উপদ্বীপকে এই শেষ জীবন বিধানের অধীনে এনে। এই সময়ের মধ্যে অর্থাৎ তার জীবিত কালের সংগ্রামের মাধ্যমে তিনি (সা:) তার সৃষ্ট জাতিকে হাতে কলমে শিখিয়ে গেলেন ইসলামের উদ্দেশ্য (সমস্ত পৃথিবীতে এই জীবন বিধান প্রতিষ্ঠা কোরে মানব জাতির মধ্যে শান্তি, ইসলাম, স্থাপন করা) ও প্রক্রিয়া (সালাত, সওম, হজ্ব , যাকাত ইত্যাদি)। এবং তার সৃষ্ট জাতিকে গভীরভাবে উপলব্ধি কোরিয়ে গেলেন যে তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার দায়িত্ব তার (সা:) পরে তাদের উপর সম্পূর্ণভাবে অর্পিত হবে। যারা এ দায়িত্ব পালন কোরবে না তারা আর তার জাতিভুক্ত থাকবে না।

এই হলো উম্মতে মোহাম্মদী -এর সমস্ত কিছু কোরবান কোরে দল বেঁধে আরব থেকে বের হোয়ে পড়ার একমাত্র কারণ। এবং ঐ জাতিই হলো সত্যিকার অর্থে উম্মতে মোহাম্মদী- মোহম্মদের (সা:) জাতি। ঐ জাতি তাদের নেতার উপর আল্লাহর অর্পিত দায়িত্ব ও তার ওফাতের পর ঐ বিরাট দায়িত্ব তাদের উপর এসে পড়া সম্বন্ধে এত সজাগ ও সচেতন হোয়েছিলেন এবং ঐ দায়িত্ব এমন গভীর ভাবে উপলব্ধি কোরেছিলেন যে, তাদের নেতা আল্লাহর রসুল (সা:) বিদায় নেবার মাত্র আট মাসের মধ্যে তারা অস্ত্র হাতে সব কিছু ত্যাগ কোরে আরব থেকে বের হোয়ে পড়েছিলেন। আর ঐ আট মাসও দেরী বোধ হয় হতোনা যদি কয়েকজন মিথ্যা নবী আর মোনাফেকরা মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতো, যাদের দমন, শায়েস্ত কোরতে ঐ আট মাস সময় লেগেছিলো। মোট কথা এ ইতিহাস অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, রসুল্লাহর (সা:) ওফাতের সঙ্গে সঙ্গে তার সৃষ্ট জাতিটা অস্ত্র হাতে দেশ থেকে বের হোয়ে পড়েছিলো। যে জাতি আল্লাহর রসূলের (সা:) পদতলে বসে তার কাছ থেকে সরাসরি ইসলাম কি তার শিক্ষা লাভ কোরেছিলো সেই জাতি যদি নেতার চলে যাবার পর সর্বপ্রথম ঐ কাজটি আরম্ভ করে তবে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, ঐ কাজটিকেই তারা উম্মতে মোহাম্মদী হিসাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সর্বপ্রধান কাজই ভেবেছিলেন। কারণ তারা উপলব্ধি কোরেছিলেন যে, এ কাজ অর্থাৎ এ জীবন ব্যবস্থা সমগ্র মানব জাতির পূর্ণ জীবনে যতদিন প্রতিষ্ঠিত না হবে ততদিন শেষ রসুল (সা:) এবং তার উম্মাহর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জন করা হবে না, তাদের কাজ শেষ হবে না। তাই ইতিহাসে দেখি এই উম্মাহ তার নেতার আরদ্ধ কাজ কোরতে পৃথিবীকে তিনটি শর্ত্ত দিয়েছেন। তারা পৃথিবীর যে দিকেই গেছেন সেদিকেই তারা তাদের বিরোধীদের তিনটি শর্ত্ত দিয়েছেন। এ শর্ত্ত তিনটি উম্মতে মোহাম্মদী শিখেছিলেন তাদের নেতা আল্লাহর রসূলের (সা:) কাছ থেকে। কারণ তিনিও বিরোধীদের ঠিক ঐ তিনটি শর্ত্তই দিতেন। শর্ত্ত গুলি হোচ্ছে:
প্রথমতঃ আল্লাহর সার্বভৌমত্ব তওহীদ ও বিশ্বনবীকে (সা:) স্বীকার কোরে নিয়ে শেষ জীবন বিধান গ্রহণ কর। তাহলে তোমরা আমাদের ভাই হোয়ে যাবে এবং আমাদের সঙ্গে একত্র হোয়ে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমাদের সহযোগী হোয়ে যাবে।

দ্বিতীয়তঃ তাতে যদি সম্মত না হও তবে রাষ্ট্রশক্তি ও শাসনভার আমাদের হাতে ছেড়ে দাও, আমরা শেষ জীবন ব্যবস্থা অনুযায়ী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবো, তোমরা ব্যক্তিগতভাবে যে যার ধর্মে আছো তাই থাকবে। আমরা বিন্দুমাত্র হস্তক্ষেপ কোরব না, তোমাদের একজোড়া ছেঁড়া জুতোও নেবনা। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যারা, আমরা শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হোলে আমাদের পক্ষ হোয়ে যুদ্ধ কোরবেন না (শুধু যুদ্ধক্ষম লোক) তারা মাথা পিছু একটা কর দেবে।


তৃতীয়তঃ যদি এটাও স্বীকার না কর তবে আর যুদ্ধ ছাড়া পথ নেই। কারণ এই জীবন ব্যবস্থা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা কোরতে বিশ্বনবীর (সা:) উপর স্রষ্টার অর্পিত দায়িত্ব পূর্ণ কোরে পৃথিবীতে শান্তি, সুবিচার প্রতিষ্ঠা কোরতে, ইবলিসের চ্যালেঞ্জে আল্লাহকে জয়ী করাতে আমরা পার্থিব সব কিছু বিসর্জন দিয়ে এখন প্রাণ বিসর্জন দিতে এসেছি। তবে যুদ্ধ কোরে বিজয়ী হোয়ে যদি আমাদের তোমাদের উপর এই জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা কোরতে হয় তাহোলেও তোমাদের ধর্মে হস্তক্ষেপ করবোনা, তবে তোমাদের যোদ্ধাদের বন্দী করবো

পরবর্তি পোস্ট

Leave a Reply