এক নজরে হেযবুত তওহীদ

হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে যাদের জানার আকাঙ্ক্ষা আছে, তাদের জন্য অতি সংক্ষেপে হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে তুলে ধরা হলো

হেযবুত তওহীদ সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংস্কারমূলক আন্দোলন যার মূল কাজই হলো মানবজাতিকে ন্যায়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করা এবং মানবজাতির অশান্তির মূল কারণ দাজ্জালের অনুসরণ না করে সমগ্র পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তার সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা। পুরো মানবজাতিকে আল্লাহর তওহীদের ভিত্তিতে অর্থাৎ সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে, সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করাই হেযবুত তওহীদের মূল লক্ষ্য। মানবজীবনে সঠিক পথ, হেদায়াহ (Right Direction) ও সত্য জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে সমস্ত মানবজাতি অন্যায় ও অবিচার থেকে মুক্তি পাবে। পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হবে অনাবিল শান্তি। সেই শান্তিময় পৃথিবী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে সংগ্রাম করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদের সদস্য-সদস্যারা।

হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠা:

হেযবুত তওহীদ ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫ ঈসায়ী; টাঙ্গাইল জেলার করটিয়ায় প্রতিষ্ঠা করা হয়। হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী। তিনি ১৯২৫ সনের ১১ মার্চ পবিত্র শবে বরাতে টাঙ্গাইলের করটিয়ার বিখ্যাত পন্নী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৬ জানুয়ারি ২০১২ ঈসায়ী তারিখে তিনি প্রত্যক্ষ দুনিয়া থেকে পর্দা (ইন্তেকাল) করেন।

বিস্তারিত

হেযবুত তওহীদের সাংগঠনিক কাঠামো

এমাম

আমীর

সদস্য

(সদস্যদেরকে মোজাহেদ-মোজাহেদা বলা হয়ে থাকে)

হেযবুত তওহীদের বর্তমান এমাম

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি হেযবুত তওহীদ মহান সৃষ্টিকর্তার এক মহাদান, তাঁরই অশেষ রহমতে এই আন্দোলন গত ২৩ বছর ধরে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। মহান আল্লাহ এই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীকে প্রকৃত ইসলামের জ্ঞান দান করলে তিনি এই আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন। আমরা (হেযবুত তওহীদের সদস্য-সদস্যারা) তাঁর নিকট থেকে প্রকৃত ইসলামের বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেছি, হেদায়াতের রাস্তা পেয়েছি, এ জন্য আমরা তাঁকে মাননীয় এমামুয্যামান তথা যুগের নেতা হিসাবে মান্য করি। তাঁর মহাপ্রয়াণের পর থেকে আন্দোলনের এমাম হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তাঁরই আদর্শের উত্তরাধিকার জনাবহোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তিনি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার পোরকরা গ্রামে ২৮ নভেম্বর, ১৯৭২ ঈসায়ী সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৬-৯৭ শিক্ষাবর্ষে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়ালেখা শেষ করে তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যকে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করেন।

বিস্তারিত

হেযবুত তওহীদের মূলনীতি:

হেযবুত তওহীদ চেষ্টা করে আল্লাহর রসুলের প্রতিটি পদক্ষেপকে অনুসরণ করতে।

হেযবুত তওহীদের কোনো গোপন কার্যক্রম নেই, সবকিছু হবে প্রকাশ্য এবং দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।

► হেযবুত তওহীদের কেউ কোনো আইন ভঙ্গ করবে না, অবৈধ অস্ত্রের সংস্পর্শে যাবে না, গেলে তাকে এমাম নিজেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে তুলে দেবেন।

► যারা হেযবুত তওহীদের সদস্য নয়, তাদের কাছ থেকে কোনরূপ অর্থ গ্রহণ করা হবে না।

► হেযবুত তওহীদের কোনো সদস্য কোনো প্রচলিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে পারবে না।

► কর্মক্ষম কেউ বেকার থাকতে পারবে না, বৈধ উপায়ে রিজিক হাসিলের চেষ্টা করবে।

হেযবুত তওহীদের কর্মসূচি:

মানবজীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মহান আল্লাহ যে কর্মসূচি তাঁর শেষ রসুলকে দান করেছিলেন, যে কর্মসূচি স্বয়ং আল্লাহর রসুল এবং তাঁর হাতে গড়া উম্মতে মোহাম্মদী অনুসরণ করেছিলেন, সেই পাঁচ দফা কর্মসূচি অনুসরণ করেই হেযবুত তওহীদ সত্যদীন, দীনুল হক প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এই ৫ দফা কর্মসূচি তিনি তাঁর উম্মাহর উপর অর্পণ করার সময় বলছেন এই কর্মসূচি আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন, এখন এটা তোমাদের হাতে অর্পণ করে আমি চলে যাচ্ছি। সেগুলো হলো :
(১) ঐক্যবদ্ধ হও।
(২) (নেতার আদেশ) শোন।
(৩) (নেতার ঐ আদেশ) পালন করো।
(৪) হেযরত (যাবতীয় অন্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কত্যাগ) করো।
(৫) এই দীনুল হক (ন্যায়, সত্য) পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা, প্রচেষ্টা।

হেযবুত তওহীদের কর্মপ্রক্রিয়া

হেযবুত তওহীদ রাষ্ট্রীয় আইনকে পূর্ণরূপে মান্য করে গত ২১ বছর ধরে আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে। মানবজাতিকে স্রষ্টার সার্বভৌমত্বের দিকে আহ্বান করার জন্য হেযবুত তওহীদ মাননীয় এমামুয্যামানের বক্তব্য ও লেখা সম্বলিত হ্যান্ডবিল, বই, পত্রিকা, প্রামাণ্যচিত্র ইত্যাদি সর্বশ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে থাকে। এরই অংশ হিসাবে বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে, রাস্তাঘাটে এই প্রকাশনা সামগ্রীগুলি বিক্রয়, বই মেলায় স্টল গ্রহণ, শিল্পকলা একাডেমী, পৌর মিলনায়তন, জাতীয় প্রেসক্লাব, পাবলিক লাইব্রেরির সেমিনার করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হল, জাতীয় যাদুঘরের সেমিনার করা সহ বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের উপস্থিতিতে, সকল ধর্মের সম্মানিত ব্যক্তি ও ধর্মগুরুদের নিয়ে মতবিনিময়ের মাধ্যমে, এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করে আমাদের সকল কার্যক্রম সম্পর্কে নিয়মিতভাবে অবহিত করে থাকি এবং প্রকাশনাসমূহ দিয়ে আমাদের বক্তব্য সম্পর্কে জানিয়ে থাকি।

হেযবুত তওহীদের প্রশিক্ষণ

মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার জন্য নিঃস্বার্থভাবে নিজেদের জীবন ও সম্পদ উৎসর্গ করে সংগ্রাম করে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন দৃঢ় চরিত্রবল, আত্মিক শক্তি, সবর, লক্ষের প্রতি অবিচলতা (হানিফ)। সেই চরিত্র হতে হবে প্রধানত উপরোক্ত পাঁচ দফা ভিত্তিক অর্থাৎ তাদেরকে হতে হবে ইস্পাতের মত ঐক্যবদ্ধ, পিঁপড়ার মতো সুশৃঙ্খল, স্রষ্টার প্রতি প্রকৃতির মতো আনুগত্যশীল, সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে নির্ভীক, কঠোর, প্রতিবাদী, নিঃস্বার্থ মানবপ্রেমী ও সংগ্রামী। এই চরিত্র অর্জনের জন্য হেযবুত তওহীদের প্রশি¶ণ হচ্ছে সঠিক পদ্ধতিতে সালাহ বা নামাজ কায়েম করা। হেযবুত তওহীদকে আল্লাহ সালাতের সঠিক উদ্দেশ্য ও প্রক্রিয়া দান করেছেন। সালাতের বাইরে হেযবুত তওহীদ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন শরীরচর্চামূলক খেলাকে (যেমন কাবাডি, ফুটবল, সাঁতার) উৎসাহিত করে থাকে।

হেযবুত তওহীদের সকল কাজে নারীদের অংশগ্রহণ

রসুলাল্লাহর সময় যেমন পুরুষ আসহাবদের পাশাপাশি নারী আসহাবগণও জাতীয় ও সামাজিক প্রায় সকল কাজে অংশগ্রহণ করেছেন ঠিক তেমনি হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের প্রায় সকল কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অংশগ্রহণ করে থাকে। আমীরের দায়িত্ব থেকে শুরু করে অফিসিয়াল কাজ, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের কাজ (যেমন: প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কাজ, হিসাব রক্ষণ বিভাগের কাজ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ইত্যাদি) এমনকি পত্রিকা, বই বিক্রির কাজেও নারীরা শরিয়াহ নির্ধারিত যথাযথ হেজাব অনুসরণ করে পুরুষের সাথে অংশগ্রহণ করেন।

হেযবুত তওহীদের বৃহত্তম মাইলফলক

২ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মহান আল্লাহ এক মহান মো’জেজা অর্থাৎ অলৌকিক ঘটনা সংঘটন করেন যার দ্বারা তিনি তিনটি বিষয় সত্যায়ন করেন। যথা: হেযবুত তওহীদ হক (সত্য), এর এমাম আল্লাহর মনোনীত হক এমাম, হেযবুত তওহীদের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে আল্লাহর সত্যদীন প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাল্লাহ।

হেযবুত তওহীদের অনন্যতা

হেযবুত তওহীদ গত ২৭ বছরে দেশের একটিও আইনভঙ্গ করেনি, এর কোন সদস্য একটিও অপরাধ করেনি। এর প্রমাণ গত ২৭ বছরে এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে পাঁচ শতাধিক অধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে কিন্তু একটি মামলাতেও এর কোন একজন সদস্যেরও কোন আইনভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সুতরাং তাদের কেউ সাজাপ্রাপ্ত হননি। আইন মান্য করার এরূপ দৃষ্টান্ত দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলির একটিও দেখাতে পারে নি। অথচ ধর্মব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্র এবং ধর্মভিত্তিক রাজনীতিক কতিপয় দলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে এ পর্যন্ত আমাদের চার জন ভাই-বোন শহীদ হয়েছেন, শত শত আহত ও পঙ্গু হয়েছেন, বহু বাড়ি-ঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

হেযবুত তওহীদের অর্থের উৎস

হেযবুত তওহীদের সদস্যরা নিজেদের উপার্জিত বা অর্জিত সম্পদ ব্যয় করে আন্দোলনের কাজ করে থাকেন।