You are currently viewing তাসাউফ হীন ভাগ

তাসাউফ হীন ভাগ

তাসাউফ হীন ভাগ

তাসাউফ হীন ভাগ: এতক্ষণ বর্তমান ‘মুসলিম’ জগতের একটা ভাগের অবস্থা বর্ণনা কোরলাম। এই ভাগটা হলো সেই ভাগ যেটা কয়েকশ বছর ইউরোপের বিভিন্ন জাতির গোলামীতে কাটিয়েছে এবং তার ফলে তাদের শেখানো ইসলাম শিখেছে, যে ইসলামে শুধু ব্যক্তিগত খুঁটিনাটি শরীয়াহ আক্ষরিকভাবে পালন করাকেই ভালো মুসলিম হবার জন্য যথেষ্ট মনে করে। ইসলামের জাতীয় দিকটা অর্থাৎ এর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আইন, দণ্ডবিধি বিচার ইত্যাদি সম্বন্ধে এদের মনোভাব ও আকীদা হোচ্ছে যেন ইসলামে এগুলির কোন অস্তিত্বই নেই, থাকলেও তা অপ্রয়োজনীয় এবং মুসলিম ও অতিমুসলিম হোতেও ওগুলির প্রয়োজন নেই।

এবার অন্য ভাগটির কথা বোলছি। এর আগে বোলে এসেছি ইউরোপের বিভিন্ন জাতি যখন মরক্কো থেকে ফিলিপাইন পর্য্যন্ত এই বিরাট মুসলিম দুনিয়াটা সামরিক শক্তি বলে অধিকার কোরে নেয় তখন কিছু কিছু জায়গা তাদের অধিকার থেকে বেঁচে গিয়েছিলো। এও বোলে এসেছি যে, এই বেঁচে যাওয়াটা এজন্য হয় নি যে, মুসলিমরা এগুলো যুদ্ধ কোরে রক্ষা কোরেছিলো। কারণ নিজেদের কৃতকর্মের ফলে একদা অপরাজেয় যোদ্ধা জাতিটি তখন পৃথিবীর দুর্বলতম শত্রুর বিরুদ্ধেও আত্মরক্ষায় অসমর্থ। ইউরোপের যে কোন ক্ষুদ্র জাতিও ইচ্ছা কোরলে বাকি ঐ অংশ অর্থাৎ যেখানে আল্লাহর ঘর, তার হাবিবের রওযা মোবারক অবস্থিত, দখল কোরে নিতে পারতো। এ কথাও বোলে এসেছি যে, বোধহয় আল্লাহ তার ঘর ও তার হাবিবের রওযার সম্মানে তা নিজে রক্ষা কোরেছিলেন। যাই হোক সত্য এই যে, ঐ এলাকাটা পাশ্চাত্যের সরাসরি দাসত্ব থেকে বেঁচে গিয়েছিলো এবং বেঁচে গিয়েছিলো বোলেই ঐ ভুখণ্ডে পূর্ব থেকেই ইসলামী শরীয়াহর যে আইন, শাসন ও দণ্ডবিধি চালু ছিলো খ্রীস্টান শক্তিগুলি তা বোদলিয়ে নিজেদের গায়রুল্লাহর আইন ও দণ্ডবিধি প্রতিষ্ঠা কোরতে পারে নি। এর ফলে ঐ এলাকায় আজও শেষ জীবন বিধানের জাতীয় শরীয়াহ দণ্ডবিধি আংশিকভাবে কার্যকর আছে। কিন্তু আকীদার বিকৃতিতে ঐ এলাকার মুসমিলমরাও পাশ্চাত্য অধিকৃত এলাকার মুসলিমদের বিকৃতির চেয়ে কম নেই। তফাৎ শুধু এইটুকু
যে, এই দুই অংশের বিকৃতি দু’রকম। সেই যে আল্লাহর রসুল (সা:) সোজা রেখা টেনে বোললেন, এই হোচ্ছে সেরাতুল মোস্তাকীম। এই লাইন থেকে একদিকে বের হোয়ে যাওয়া ভাগের কথা বোলে এসেছি। এখন যাদের কথা বোলতে যাচ্ছি তারা বের হলো ঠিক উল্টো দিকে।

আমি বার বার বোলে আসছি যে, এই জীবন ব্যবস্থা একটা ভারসাম্যযুক্ত ব্যবস্থা, এর প্রতিটি ব্যাপারে প্রতিটি ভাগেও সেই ভারসাম্য আল্লাহ দিয়ে রেখেছেন যে জন্য তিনি আমাদের জানিয়ে দিচ্ছেন যে তার রসূলের এই উম্মাহ ভারসাম্যযুক্ত। এই ভারসাম্য অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয়। এত জরুরী এই ভারসাম্য যে, এটা ছাড়া এই দীনই অর্থহীন হোয়ে যায়। সোজা হোয়ে দাঁড়াতে গেলে, হাঁটতে গেলে ভারসাম্য ছাড়া অসম্ভব। একটা মানুষ মহাশক্তিশালী হোলেও যদি তার দেহের ভারসাম্য না থাকে তবে সে দাঁড়াতে বা হাটতে পারবে না। দীনেরও তাই। কাজেই যার মধ্যে দেহের ও আত্মার, আখেরাতের আর দুনিয়ার, এই জগতের আর পরজগতের, জড় ও আধ্যাত্ম্যের ভারসাম্য, সরিয়াহ ও তাসাউফের সংমিশ্রন নেই তার জীবন অর্থহীন। তিনি মহা পণ্ডিত মহা শিক্ষিত হোতে পারেন, মহা সাধু পুরুষ মহাসাধক হোতে পারেন কিন্তু তিনি এই ভারসাম্যযুক্ত উম্মতে নেই, যে ভারসাম্য ছাড়া পুলসেরাত পার হওয়া অসম্ভব সে ভারসাম্য তার মধ্যে নেই। এখন সেই ভাগটার কথা বোলছি যেটা ভাগ্যক্রমে পাশ্চাত্যের দাস হওয়া থেকে বেঁচে গিয়েছিলো বোলে তাদের মধ্যে আংশিকভাবে এই দীনের দণ্ডবিধি আজও চালু আছে কিন্তু ঐ পর্য্যন্তই। দীনের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এ সমস্ত ব্যবস্থা অন্যান্য ভাগের মতই পরিত্যক্ত হোয়েছে এবং প্রাক ইসলামিক যুগের মত রাজতন্ত্র, বংশতন্ত্র ও গোষ্ঠীতন্ত্র ফিরিয়ে এনে প্রতিষ্ঠা করা হোয়েছে। যেহেতু, বংশতন্ত্র ও গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হোয়েছে সুতরাং স্বতঃস্ফুর্ত্তভাবে ইসলামের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সেখানে অচল হোয়ে গেছে, কারণ ঐসব তন্ত্রে জাতীয় সম্পদের, সরকারী কোষাগারের (Treasury) মালিক হলো রাজা বা বাদশাহ, আর আল্লাহর দীনের ব্যবস্থায় কোষাগারের মালিক হলো সমস্ত জাতি। খলিফা শুধু রক্ষক, তত্বাবধানকারী ও এই জীবন বিধানের নিয়মানুযায়ী ব্যবহারকারী। অর্থাৎ শুধু দণ্ডবিধি ছাড়া অন্যান্য জাতীয় ব্যাপারে এই অংশটি গায়রুল্লাহর অনুসারী অর্থাৎ মোশরেক। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, সংঘর্ষ ও রক্তপাতের অন্যতম প্রধান যে কারণ অর্থাৎ ভৌগোলিক জাতীয়তাবাদ এরা পাশ্চাত্যের কাছ থেকে গ্রহণ কোরেছে এবং প্রাক ইসলামের যে গোত্র, গোষ্ঠীবাদকে ইসলাম কবর দিয়েছিলো সেটাকে কবর থেকে উঠিয়ে এনে জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা কোরেছে। শুধু দণ্ডবিধিটুকু জাতীয় জীবনে চালু রাখার জন্যই এই ভাগটা নিজেদের প্রকৃত এবং নিষ্ঠাবান মুসলিম মনে কোরে মহা আত্মপ্রাসাদে স্ফীত হোয়ে আছে। তাসাউফকে এরা সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ কোরেছেন, যেন ওর কোন প্রয়োজন জীবনে নেই। আবার সেই ভারসাম্যহীনতা, এবারে উল্টোদিকে। পেছনে বর্ত্তমান মুসলিম দুনিয়ার যে ভাগটার কথা বোলে এসেছি সেটার সাথে এ ভাগটার প্রধান তফাৎ হলো দু’টি। ঐ ভাগটির জাতীয় জীবনে দণ্ডবিধি নেই, সে জায়গায় পাশ্চাত্যের তৈরী দণ্ডবিধি চালু আছে। এই ভাগে সরাসরি গোলাম হওয়া থেকে বেঁচে যাওয়ার কারণে ওটা চালু আছে। দ্বিতীয়তঃ আগের ভাগ একপেশে ভারসাম্যহীন বিকৃত তাসাউফকে আকড়ে ধোরে নির্জনে খানকায় বোসে আত্মার ঘষামাজা করেন, যে ভাগটার কথা এখন বোলছি তারা সেটাকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেন। প্রকৃত ইসলামের দেহের ও আত্মার, শরীয়াহর ও তাসাউফের যে ভারসাম্য সেটা ঐ উভয় ভাগই নষ্ট কোরে ফেলেছে। এই ভাগ ইসলামের দণ্ডবিধি চালু রাখায় তার ফলে তাদের জাতীয় জীবনে নিরাপত্তা, সুবিচার ইত্যাদি ভোগ করছে কিন্তু ব্যক্তি জীবনে আত্মার শোধনেরস্থান না থাকায় সুযোগ পেলেই অন্যায়ের আশ্রয় নেয়। অর্থাৎ এক ভাগ এই পা ছাড়া আরেক ভাগ ঐ পা ছাড়া, ফল একই- চলার শক্তিহীন, স্থবির, পঙ্গু। যে ভাগের কথা এখন বোলছি এ ভাগের লোক গুলোর জীবনে যেহেতু তাসাউফের কোন প্রভাব নেই অথচ দেশে শরীয়ার দণ্ডবিধি চালু কাজেই এরা যতক্ষণ দেশের ভেতরে থাকে ততক্ষণ বিশেষ অপরাধ, গোনাহ করে না, কারণ শরীয়াহ আইনে অন্যায়ের শাস্তি কঠোর। কিন্তু একবার দেশের বাইরে যেতে পারলেই এরা পরিণত হয় দুরাচারী মানবেতর জীবে। তাসাউফের কোন প্রভাব এদের ব্যক্তি জীবনে নেই বোলে এদের নিজেদের লোভ, হিংসা অহংকার ইত্যাদির উপর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এগুলোর যা কিছু নিয়ন্ত্রণে থাকে তা শুধু শাস্তির ভয়ে। কাজেই দেশের বাইরে যেতে পারলে এরা লাগামহীনভাবে জীবন উপভোগ করে।

কিছুদিন আগে পর্য্যন্ত এই ভাগটি পৃথিবীর যে অংশে বাস কোরত তা ছিল অতি গরীব। মাটির নিচ থেকে তেল বের হওয়ার পর থেকে হঠাৎ ধন দৌলত ও সম্পদে পৃথিবীর অন্যতম ধনী জাতিতে পরিণত হোয়েছে। এখন এদের সম্পদ রাখবার জায়গা নেই। এই সম্পদ তারা কিভাবে ব্যবহার কোরছে? এরা একটা অংশ এর ব্যয় কোরছে পাশ্চাত্যের অনুকরণ কোরে দেশের রাস্তাঘাট, পুল, হাসপাতাল, বিদ্যালয়, বিরাট বিরাট প্রাসাদ, হোটেল, ফ্লাইওয়ে ইত্যাদি তৈরী কোরে। অঢেল টাকা ব্যয় কোরে এগুলো এমনভাবে তৈরী কোরছে যে, ইউরোপের, আমেরিকার মানুষরাও দেখে আশ্চর্য হোচ্ছে, হিংসা কোরছে। অগুনতি রাজকীয় প্রাসাদ, হোটেল, সমস্ত ইমারত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। শাদ্দাদ আল্লাহর সঙ্গে নাকি পাল্লা দিয়ে জান্নাত বানিয়েছিলো। সে আজ কবর থেকে উঠে এসে এদের শহর, নগর, পথ-ঘাট, হোটেল আর প্রাসাদ গুলি দেখলে বোলবে- আমি আর কি বানিয়েছিলাম। সম্পদের অন্যভাগ তারা ব্যয় কোরছে অবিশ্বাস্য বিলাসিতায়, স্থুল জীবন উপভোগে, ইউরোপে, আমেরিকায়, জাপানে। দৈহিক ভোগে এরা কি পরিমাণ সম্পদ ব্যয় করে তা আমাদের মত গরীব দেশ গুলির মুসলিমরা ধারণাও কোরতে পারবে না, লক্ষ লক্ষ ডলার তাদের কাছে কিছু নয়। তাদের ঐ অঢেল সম্পদের একটা মোটা ভাগ চলে যায় ঐ ইউরোপ, আমেরিকায়, জাপান ইত্যাদি দেশের কাছে, বিলাসিতার সামগ্রীর দাম হিসাবে। পৃথিবীর সবচেয়ে দামী গাড়ী গুলো কেনে এরাই। শুধু তাই নয়, রোলস, মার্সিডিস, আলফা-রোমিও, সিট্রন, ক্যাডিলাক ইত্যাদি গাড়ী শুধু কিনেই তারা খুশী নয়, এই গাড়ী গুলির বাম্পার লাইনিং ইত্যাদি তারা খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দেয়। এদের বিলাসিতার বিভৎসতার সম্বন্ধে লিখতে গেলে আলাদা বই হোয়ে যাবে। কাজেই একটা ধারণা দেবার জন্য একটি মাত্র ঘটনার উল্লেখ কোরছি। কিছুদিন আগে তেল সমৃদ্ধ একটি দেশের বাদশাহ অবসর যাপনের জন্য কয়েক দিনের জন্য ফ্রান্সের ভূমধ্যসাগরীয় শহর ‘নীসে’ গিয়েছিলেন। এই শহরে তিনি এর আগেই একটি প্রাসাদ তৈরী কোরেছেন। এতে কামরা আছে একশতটি এবং কামরা গুলি ইউরোপের সবচেয়ে মূল্যবান আসবাব দিয়ে সজ্জিত। এই প্রাসাদ তৈরী কোরতে খরচ হোয়েছে মাত্র ছয় হাজার কোটি টাকা (আমাদের টাকার হিসাব)। এই বাদশাহর সোনার পাত মোড়ানো রোলস গাড়ী গুলির এক একটি দাম এক কোটি বিশ লাখ টাকা। তার নিজের ও পরিবারের ব্যবহারের জন্য যে বিমান গুলি আছে তার এক একটির দাম সাতচল্লিশ কোটি টাকা। এদের মধ্যে তাসাউফের কিছুমাত্র প্রভাবও থাকলে এরা এমন কদর্য বিলাসিতায় নিজেদের ডুবিয়ে দিতে পারতেন না। নিজেদের অতি উৎকৃষ্ট মুসলিম বোলে মনে কোরলেও এবং তা প্রচার কোরলেও আসলে ইউরোপ, আমেরিকার বস্তুতান্ত্রিকদের (Materialist) সাথে তাদের কার্যতঃ কোন তফাৎ নেই। এরা এই উম্মাহর কেন্দ্র কাবা এবং নেতার (সা:) রওযা মোবারকের হেফাযতকারী হোলেও এই উম্মাহর জন্য তাদের মনে কিছুমাত্র সহানুভূতি নেই। তার প্রমাণ হোচ্ছে এই যে, নিজেদের ঘৃণ্য বিলাসিতার সামগ্রী কিনতে তাদের বিপুল সম্পদ চলে যায় ইউরোপ, আমেরিকা আর জাপানে। তারপরও যে বিরাট সম্পদ তাদের থেকে যায় তা বিনিয়োগ করেন সেই ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত আর জাপানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে, শিল্পে। টাকা জমা রাখেন ঐসব দেশের ব্যাংকেই যা থেকে লাভবান হয় ঐসব অমুসলিম দেশ ও জাতি গুলিই। ইসলাম ও মুসলিম জাতির প্রতি তাদের কিছুমাত্র ভালোবাসা যদি থাকতো তবে ঐ বিরাট সম্পদ তারা অমুসলিম দেশ গুলিতে বিনিয়োগ না কোরে গরীব মুসলিম ভৌগোলিক রাষ্ট্র গুলিতে বিনিয়োগ করতেন। এতে অন্ততঃ পার্থিব দিক দিয়ে এই হতভাগ্য জাতির কিছু অংশ উপকৃত হোতে পারতো। অন্যান্য অতি দরিদ্র মুসলিম দেশ গুলির জন্য তারা কিছু কিছু মাঝে মাঝে খয়রাত করেন যখন কোন দেশে বন্যা, ঝড় বা প্লাবনের মত প্রাকৃতিক কারণে মহা ক্ষতি হয়। এইসব দেশ গুলির মানুষকে তারা ডাকেন মিসকীন বোলে। যে ঐক্য ছাড়া শক্তি নেই, জাতির সেই ঐক্য সুদৃঢ় রাখার জন্য রসুলাল্লাহ (সা:) তার জীবনের শেষ জনসমাবেশে বিদায় হজ্বে বোলে গেলেন আরবের মানুষের উপর অনারব মানুষের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই যেমন নেই অনারব মানুষের উপর আরবের মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব, অর্থাৎ সবাই সমান। মানুষে মানুষে প্রভেদের একটিমাত্র সংজ্ঞা দিয়ে গেলেন, কে কত ভাল মুসলিম। ঐ ‘উৎকৃষ্ট মুসলিমদের’ আজ মহানবীর (সা:) ওসব কথা কিছুই মনে নেই। থাকলেও ওসব কথার কোন গুরুত্ব তারা দেয়না। তারা আরব, সবার শ্রেষ্ট এই অহংকারে স্ফীত হোয়ে অন্যকে অনুকম্পার পাত্র মনে কোরছে। অবশ্য এর অবশ্যম্ভাবী পরিণতিকে এড়াতে পারছেনা। ইসলাম দীনে ফিতরাত, প্রাকৃতিক আইন, নিয়মের ধর্ম, সেই নিয়ম মোতাবেকই বিপুল সম্পদ ও আধুনিক অস্ত্র শস্ত্রে বলীয়ান পনেরো কোটি আরবের পেটের হালুয়া বের হোয়ে যাচ্ছে ত্রিশ লাখের ক্ষুদ্র ইসরাইলীদের লাথি খেতে খেতে। তবুও তারা অহংকারী, কারণ বাকী অ-আরব ‘মুসলিমদের’ মত তাদেরও অপমান বোধ লোপ পেয়েছে।

এই আরব দেশ ও আমীরাত গুলির তাসাউফ হীন বাদশাহ ও আমীরদের এলাহ হলো তাদের যার যার সিংহাসন ও আমীরত্ব। এই সিংহাসন ও আমীরত্বের নিরাপত্তার জন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের ও ইউরোপের কথায় ও আদেশে উঠেন বসেন, অন্য মুসলিম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেন। মুখে ইসরাইলের বিরুদ্ধে লোক দেখানো চিৎকার কোরলেও কার্য্যতঃ ইসরাইলের ক্ষতি হবে এমন কোন কাজ করেন না, ঐক্যবদ্ধ হোয়ে ইসরাইলকে ধ্বংস করেন না, কারণ তা করতে গেলে প্রভু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ বিরক্ত হবে এবং তাতে তাদের সিংহাসন ও আমীরত্ব হারাতে হোতে পারে। যদি এমন কোন পরিস্থিতি কখনও হয় যে তাদের সিংহাসন বা আমীরত্ব রক্ষা এবং কাবা ধ্বংস করা এ দুটোর মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে, তবে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, তারা কাবা ধ্বংসকেই বেছে নেবেন।

Leave a Reply