You are currently viewing প্রাকৃতিক শক্তি বা ফেরেশতা
আরোরা

প্রাকৃতিক শক্তি বা ফেরেশতা

পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থগুলি ও বিজ্ঞান একমত যে মানুষ সৃষ্টির বহু আগে স্রষ্টা এই বিপুল বিশ্ব-জগত সৃষ্টি কোরেছেন। এই বিশাল সৃষ্টিকে তিনি প্রশাসনও পরিচালনা কোরতেন এবং করেন তার অসংখ্য মালায়েকদের দিয়ে যাদের আমরা বলি ফেরেশতা ফারসি ভাষায়, ইংরাজীতে Angel। ভারতীয়, রোমান এবং গ্রীকরা যে দেব-দেবী, gods, goddess বিশ্বাস করেন সে গুলো এবং মালায়েক বা ফেরেশতা একই জিনিষ। সংখ্যায় এরা অগন্য এবং এরা আসলে প্রাকৃতিক শক্তি যে শক্তি দিয়ে আলল্লাহ তার সমস্ত সৃষ্টিকে শৃঙ্খলার মধ্যদিয়ে পরিচালনা করেন এবং এদের কোন ইচ্ছাশক্তি নেই। আল্লাহ যাকে যে নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন, যাকে যে কর্ত্তব্য নির্দ্ধারণ কোরে দিয়েছেন, সে ফেরেশতা সামান্যতম বিচ্যুতি না কোরে তা যথাযথ কোরে যাচ্ছেন। আসলে কোন বিচ্যুতি হোতে পারে না কারণ প্রাকৃতিকশক্তি গুলির কোন স্বাধীন ইচ্ছাই নেই। যেমন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি একটি মালায়েক। এর উপর স্রষ্টা কর্ত্তব্য নিধারণ কোরে দিয়েছেন সমস্ত কিছুকে আকর্ষণ কোরে ধোরে রাখার। সৃষ্টির প্রথম থেকে এই ফেরেশতা তার কর্ত্তব্য কোরে যাচ্ছেন এবং শেষ পর্য্যন্ত কোরে যাবেন। তার এতটুকু ইচ্ছা শক্তি নেই যে, এক মুহূর্ত্তের এক ভগ্নাংশের জন্যও তিনি এই কাজের বিরতি দেন, সে ইচ্ছাশক্তি আল্লাহ তাকে দেননি। এমনি আন্যান্য বাতাস, পানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি সমস্ত প্রাকৃতিক শক্তিগুলি ফেরেশতা, দেব-দেবী, অন্যান্য ধর্মে যেমন দেব-দেবীরা কোন না কোন প্রাকৃতিক শক্তির ভারপ্রাপ্ত, যেমন হিন্দু শােস্ত্রে বরুন বাতাসের দেবতা, সূর্য্য একটি দেবতা সূর্য্য দেব, গ্রীকদের নেপচুন সমুদ্রের, পানির দেবতা, রোমানদের ভালকান হোচ্ছেন আগুনের দেবতা, তেমনি ইসলাম ধর্মেও আগুনের, বাতাসের ইত্যাদির ফেরেশতা আছেন। আরও ব্যাপারে মিল আছে। সব ধর্ম মতেই এরা সংখ্যায় বিশাল স্বভাবতই, কারণ এই অসীম সৃষ্টিতে প্রাকৃতিক শক্তিও অসংখ্য।

ভারতীয় ধর্ম গুলিতে এদের সংখ্যা ধরা হয় তেত্রিশ কোটি। খ্রীস্টানরাও এদের সংখ্যা বলেন কোটির অংকে। ত্রয়োদশ শতাব্দীর যাজক পণ্ডিত এ্যালবার্টাস ম্যগনাস তো হিসেব কোরে (কেমন কোরে হিসাব কোরলেন আল্লাহই জানেন) বের কোরেই ফেললেন যে Angel অর্থাৎ ফেরেশতার সঠিক সংখ্যা হোচ্ছে ঊনচল্লিশ কোটি, নিরানব্বই লক্ষ, বিশ হাজার চার জন- হিন্দুদের চেয়ে সাত কোটির মত বেশী। জাপানের শিনটো ধর্মে দেব-দেবীর সংখ্যা আশী লক্ষ। মেরাজে যেয়ে বিশ্বনবী মোহাম্মদ (দ:) দেখেছিলেন যে, বায়তুল মামুর সমজিদে হাজার হাজার ফেরেশতারা একদিক দিয়ে ঢুকছেন, সালাত পড়ে আরেক দিক দিয়ে বের হোয়ে যাচ্ছেন। তাদের সংখ্যা সম্বন্ধে বোলতে যেয়ে তিনি বোলেছেন একবার যারা নামায পড়ে বের হোয়ে যাচ্ছে তাদের আর দ্বিতীয় বার নামায পড়ার সুযোগ আসবে না- অর্থাৎ অসংখ্য। অসীম সময় থেকে আল্লাহ তার বিশাল সৃষ্টিকে তার অসংখ্য মালায়েকদের দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে প্রশাসন ও পরিচালনা কোরে আসছিলেন।

সূত্র: হাদীস- আনাস (রা:) থেকে সাবেত আল বুতানী, মুসলিম, মেশকাত।

Leave a Reply