ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্বই হচ্ছে মানবসমাজের শ্বাশ্বত ইতিহাস। এই দ্বন্দ্বে সত্য হচ্ছে শুভশক্তি আর মিথ্যা হচ্ছে অপশক্তি। যাবতীয় সত্য এসেছে স্রষ্টার পক্ষ থেকে, সত্যের ফল হচ্ছে শান্তি, ঐক্য, সম্প্রীতি, মানবতা। পক্ষান্তরে মিথ্যার ফল হচ্ছে অশান্তি, অনৈক্য, বিদ্বেষ ও পাশবিকতা। সুতরাং কোনো স্বার্থের দ্বারা প্রণোদিত হয়ে যারাই মিথ্যার পক্ষ অবলম্বন করে, মিথ্যার বিস্তার ঘটায় তারাই অপশক্তি। তারা মানবসমাজের অশান্তির কারণ। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, যারা ধর্মের প্রকৃত সত্যগুলোকে গোপন করে এবং ধর্মকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে তারা সমাজে মিথ্যার বিস্তার ঘটায়। সুতরাং তারা বড় একটি অপশক্তি। যারা জনসেবার নামে রাজনীতি করেন আর ব্যক্তিগত আয়-উন্নতির জন্য দুর্নীতি, লুটতরাজ করেন তারা একটি বড় অপশক্তি। বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় অপশক্তি হচ্ছে দাজ্জাল অর্থাৎ Ôইহুদি-খ্রিষ্টান বস্তুবাদী সভ্যতা’, যা আত্মাহীন, আত্মকেন্দ্রিক, জড়বাদী, ভোগবাদী, স্বার্থপর একটি জীবনযাত্রায় মানুষকে অভ্যস্ত করে তুলেছে। পরিণামে মানুষ দিন দিন পশুতে পরিণত হয়েছে। আজ আমাদের ব্যক্তিগত থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিহিংসা আর স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য যে হানাহানি, রক্তপাত, যুদ্ধ-বিগ্রহ, সামাজিক ও আন্তর্জাতিক ধর্মব্যবসা ও স্বার্থের রাজনীতি চলছে তার মূল হোতা এই পাশ্চাত্য জড়বাদী সভ্যতা। একেই আল্লাহর রসুল রূপকভাবে বলেছেন যে আখেরি যুগে একটি বিরাট শক্তিশালী দানব আসবে যার এক চক্ষু কানা হবে অর্থাৎ সে শুধু জড়ের দিক, বস্তুর দিক দেখবে, আত্মার দিক দেখবে না। তার কপালে কাফের লেখা থাকবে। কাফের শব্দের তাৎপর্য হচ্ছে সে স্রষ্টার প্রেরিত মূল্যবোধ, ন্যায়-অন্যায়ের মানদণ্ডকে প্রত্যাখ্যান করবে, তার দ্বারা মানবতার অকল্যাণ হবে, অশান্তি বিস্তার হবে। আমরা এই সব অপশক্তিগুলোর বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়ানোর কথা বলছি।
হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা এমামুয্যামান মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী যখন হেযবুত তওহীদ গঠন করেছেন তখন থেকেই তিনি একটি কথা প্রায়ই বলতেন, হেযবুত তওহীদ যে কাজ নিয়ে দাঁড়িয়েছে, দুনিয়াবি হিসাবে এ এক অসম্ভব কাজ। অল্প কিছু মানুষ দাঁড়িয়েছে এই বড় যমুনা নদীর স্রোত উল্টে দেওয়ার জন্য। আমাদের মত কয়েকজন দরিদ্র্য সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, অস্ত্র নেই, শক্তি নেই, এই আমরা যে দাজ্জালের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছি সে দাজ্জাল বর্তমান দুনিয়ার প্রভুর আসনে উপবিষ্ট। তার হাতে রয়েছে বিরাট সামরিক শক্তি, সমস্ত মিডিয়া, বিশাল অর্থ-সম্পদ। কাজেই এত বিরাট অপশক্তির বিরুদ্ধে জয়লাভ অসম্ভব ব্যাপার। ‘হেযবুত তওহীদ’ সেই দাজ্জালের তুলনায় একটা বিন্দু বা একটা ক্ষুদ্র কণার মতো। এই অসম শক্তির মোকাবেলা কী আদৌ সম্ভব?
হ্যাঁ। এই অসম শক্তির মোকাবেলা করতে সক্ষম কেবলমাত্র সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ। তিনিই আমাদের শক্তি। তিনিই হেযবুত তওহীদের দ্বারা বিরাট দাজ্জালকে পরাজিত করবেন ইনশাল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা হতোদ্দম হয়ো না, নিরাশ হয়ো না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হও।” যদি আমরা আল্লাহকে আমাদের সমুদয় জীবন-সম্পদ দিয়ে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালাই তাইলে আল্লাহ মুমিনদের প্রতি ওয়াদাবদ্ধ-অঙ্গিকারাবদ্ধ যে তিনি তাদের পৃথিবীময় কর্তৃত্ব দিবেন, এই হলো আল্লাহর ওয়াদা (সুরা নুর ৫৫)। তাছাড়া ২০০৮ সনে যাত্রাবাড়ীতে এমামুয্যামানের ভাষণের মধ্যে দিয়ে আল্লাহ স্বয়ং এক মহান ম’জেজা ঘটিয়েছিলেন, সেখানে তিনি নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, তিনি হেযবুত তওহীদ দিয়ে সমস্ত দুনিয়াময় তার সত্যদীন প্রতিষ্ঠা করবেন। এটা শুধু আমাদের ঈমান নয়, এটা আমরা জানি, এটা আমাদের ইলমাল ইয়াকীন বা নিশ্চিত জ্ঞান। এমামুয্যামান বলেছেন, ‘পৃথিবীতে হেযবুত তওহীদ’ দিয়ে সত্যদীন প্রতিষ্ঠা হবে না, হয়ে গেছে। এটা অতীতের মতো সত্য। আল্লাহ এনশাল্লাহ বিজয় করবেন। কারণ হেযবুত তওহীদ’আল্লাহর। একে অশান্তির বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিজয়ী করার দায়িত্ব আল্লাহর। কীভাবে সম্ভব? ঐ যে বললাম, আল্লাহ করবেন। তবে শর্ত হলো, আমাদের জীবন-সম্পদ দিতে হবে। আমরা আমাদের শর্ত পূরণ করার চেষ্টা করছি।