হেযবুত তওহীদের মেয়েরা পত্রিকা বিক্রি করেন। এটা ইসলামের দৃষ্টিতে কতটুকু শরিয়তসম্মত?
ধর্মব্যবসায়ী মোল্লারা বাস্তবেই মেয়েদেরকে ঘরের চার দেওয়ালের মধ্য বন্দী করে রাখতে চায়, হেযবুত তওহীদের বেলায় এ কথাটি বহুবার বহুভাবে প্রমাণিত হয়েছে। মোল্লারা যখন ফতোয়া দেয়, তাদের কথাগুলি মানুষ আল্লাহ-রসুলের কথা বলেই বিশ্বাস করে। শিক্ষিত শ্রেণির এ এক অন্ধত্ব। তারা যাচাই করে না যে সেগুলি ইসলামের ইতিহাসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা এটা বিবেচনা না করেই মানুষ ইসলামকে বর্বর, পশ্চাৎমুখী বলে অপবাদ দেওয়া হয়। অথচ পর্দা প্রথার নামে যে জগদ্দল পাথর মোল্লারা মেয়েদের উপরে চাপিয়ে রেখেছে সেটা ইসলাম সম্মত নয়। আমাদের নারী কর্মীরা যখন সত্য প্রচারে বা পত্রিকা বিক্রি করতে বের হয়, তাদেরকে অনেকেই প্রশ্ন করে, ‘তোমরা ঘর থেকে বের হলে কেন? মেয়েদেরকে রাস্তায় বের করে দিয়ে হেযবুত তওহীদ তো ইসলামটা ধ্বংস করে দিচ্ছে।’আবার কেউ বলে, রাস্তার মধ্যে ইসলামের কথা বলে, এটা আবার কোন ইসলাম? হকারি করে মেয়েরা, পত্রিকা বিক্রি করে মেয়েরা, এটা তো কোন দিন দেখি নি। অনেকে সময় তারা সন্দেহ করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ অফিসারও একই মন্তব্য করেন, মেয়ে মানুষ পত্রিকা বিক্রি করে এমন কখনও দেখি নি।’
এইসব অদ্ভুদ ও যুক্তিহীন প্রশ্নের একটাই অর্থ দাঁড়ায়- মেয়েরা ইটভাটায় দিনমজুরের কাজ থেকে শুরু করে দেশ পরিচালনা পর্যন্ত সবই কোরতে পারবে, কিন্তু ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে তারা ঘর থেকেও বের হতে পারবে না। জাতির এই মানসিক পক্ষাঘাত কবে ঘুঁচবে? ইসলামের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞতাই এ প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। আল্লাহর রসুলের সময় মেয়েরা রসুলের সঙ্গে যুদ্ধে পর্যন্ত গেছেন। তারা সামাজিক সকল কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রেখেছেন, মসজিদে পুরুষদের সঙ্গেই সালাতে অংশ নিয়েছেন, পরামর্শ সভায় পরামর্শ দিয়েছেন, হাসপাতালের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করেছেন। রসুলের সময় সবকাজে মেয়েদের অংশগ্রহণ ছিল অবারিত। অথচ আজ মেয়েদের কেবলই ঘরের কাজে আটকে রাখতে চায় ধর্মব্যবসায়ীরা। জাতির অর্ধেক শক্তিকে এভাবে অপচয় করে তারা জাতির ধ্বংস ডেকে এনেছেন এটা বোঝার শক্তিও তাদের নেই। আমাদের মেয়েরা পত্রিকা বিক্রি করেন এটা তাদের পেশা নয়, সংগ্রাম। এটি নারীমুক্তির একটি সোপান।