আপনারা সকলকে ঐক্যবদ্ধ করতে চান, কিন্তু হুজুর অর্থাৎ আলেমদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন কেন?
হুজুর বলতে আজ যাদেরকে বোঝানো হয় তারা আসলে ইসলামের কেউ নয়। আজকে সমাজে এই পুরোহিত শ্রেণিটি ব্রিটিশদের দেয়া আল্লামা, মুফতি, মাওলানা, ইত্যাদি টাইটেল নিজেদের নামের আগে পিছে যোগ দিচ্ছেন এগুলো কতটুকু বৈধ, কতটুকু অবৈধ সেটা নিয়ে চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে। আল্লাহর রসুলের সাহাবিরা কি এদের চেয়ে ইসলাম কম জানতেন? তাদের নামের সঙ্গে তো কোনো মাওলানা, গাউস কুতুব, আল্লামা জাতীয় খেতাব দেখি না? মাওলানা শব্দের অর্থ কী? মাওলা মানে প্রভু, আর মাওলানা মানে আমাদের প্রভু। ওরা কি আমাদের প্রভু? এই সত্য কথাগুলো বলি দেখে বলা হয়, আমরা হুজুরদের পেছনে লেগেছি। এ অভিযোগ সত্য নয়। আমরা বলছি ধর্ম এসেছে মানুষের কল্যাণ সাধনের জন্য, এটা বিক্রি করে খাওয়ার জন্য নয়। এটা করলে ধর্ম বিকৃত হয়ে যায়, সেটা থেকে মানুষ আর কল্যাণ পায় না, অকল্যাণ পায়। এজন্য আল্লাহ ধর্মব্যবসাকে হারাম করেছেন। এই সত্যটি আমরা মানবজাতির সামনে তুলে ধরেছি। এতে যাদের কায়েমি স্বার্থে আঘাত লেগেছে তারাই আমাদের বিরুদ্ধে লেগেছে, আমরা কারো পিছনে লাগি নি। আমরা হুজুর বলতে বুঝি কেবল একজনকেই, তিনি মহানবী (দ.)। সমাজে যারা আজ হুজুর হিসাবে পরিচিত আমরা তাদেরকে ছোট করছিনা। তারা আগেই ছোট হয়ে আছেন। সবাই তাদেরকে বলে দুই টাকার মোল্লা, দুই টাকা দিয়ে কেনা যায়। মসজিদ কমিটির সুদখোর সেক্রেটারির হাতে তার চাকরি বাঁধা, সেই কমিটির লোকদের জুতার তলা মুছতে মুছতে তাদের দফারফা, তাদের পেছনে আমরা লেগে কী করব? এত নিকৃষ্ট অবস্থা হয়েছে মসজিদের এমামদের, মুয়াজ্জিনদের। ধর্মব্যবসা করে, হারাম খেয়ে তারা নিজেদেরকে অনেক ছোট করে ফেলেছে। মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখার জন্য তাদের কোনো আত্মিক শক্তি বা নৈতিক মনোবল কিছুই নেই। ছোট হতে হতে এত ছোট হয়েছেন যে সমাজে তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না, গোনা যায় না। এখন তারা কয়দিন পর পর কুয়ার ব্যাঙ এর মতো কুয়ার থেকে বেরিয়ে এসে একটা তাণ্ডব সৃষ্টি করে, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আবার ইঁদুরের মতো পাগড়ির লেজ হাওয়ায় উড়িয়ে গর্তে লুকায়। এরা না পারছে মানবতার কল্যাণ করতে, না পারছে নিজেদের কল্যাণ করতে। কাজেই এরা নিজেরা নিজেদেরকে ছোট করেছে। আমরা বরং তাদেরকে ডেকে ডেকে এনে বড় করার চেষ্টা করছি। আমরা বলছি, আপনারা ধর্মব্যবসা থেকে হালাল উপার্জন করেন, মানুষের কল্যাণে কাজ করে, তাহলে আপনারা আল্লাহর কাছে বড় হবেন, মানুষের কাছে বড় হবেন। কিন্তু তারা এ ক্ষুদ্র স্বার্থে ধর্মব্যবসাকে টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক ক্ষুদ্র হয়ে গেছেন। আজকে মুর্দা দাফন করলে তাদেরকে প্রয়োজন, বাচ্চার নাম রাখার জন্য তাদের ডেকে আনে, তাদেরকে আর কোনো কাজে সমাজের প্রয়োজন নাই। একজন অপরাধীকে অপরাধীকে হিসেবে চিহ্নিত করা কি তাকে ছোট করা হয়? মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় অপরাধী এই ধর্মব্যবসায়ীরা।