ইসলাম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হেযবুত তওহীদের সামরিক নীতি কী?

0
হেযবুত তাওহীদ
Feb 25, 2023 05:01 PM 1 Answers হেযবুত তওহীদের সাংগঠনিক কাঠামো
Member Since Jul 2022
Subscribed Subscribe Not subscribe
Flag(0)
0 Subscribers
Submit Answer
Please login to submit answer.
1 Answers
Best Answer
0
হেযবুত তাওহীদ
Feb 25, 2023
Flag(0)

হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী নিজস্ব কোন সামরিক নীতি গ্রহণ করেন নাই, তিনি মহানবীর নীতি অর্থাৎ ইসলামের রূপটাকেই তুলে ধরেছেন।

আল্লাহর তওহীদ ভিত্তিক সত্যদীনকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করার নীতি হচ্ছে জেহাদ। আদর্শিক লড়াই যেকোনো যুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা জেহাদের অন্তর্ভুক্ত, এরপর আছে সশস্ত্র যুদ্ধ যাকে কেতাল বলা হয়। ইসলাম প্রতিষ্ঠার নীতি যে জেহাদ তার মধ্যে আদর্শিক লড়াই ও সামরিক লড়াই উভয়ই অন্তর্ভুক্ত। আদর্শিক লড়াই যে কেউ করতে পারে কিন্তু সশস্ত্র যুদ্ধ ইসলামের নীতি মোতাবেক কেবল সার্বভৌম রাষ্ট্র করতে পারে, ব্যক্তি বা দল সেটা করতে পারে না। করলে তা অবৈধ হবে। কিন্তু আদর্শিক ও সামরিক যুদ্ধ উভয়টাই ইসলামের নীতি, যখন যেটা প্রয়োজন সেটাই প্রয়োগ করা যেতে পারে।

ইসলাম কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের জন্য আসে নি, এর আওতা সমগ্র মানবজাতি ও সমগ্র বিশ্ব। উম্মতে মোহাম্মদীর দৃষ্টিভঙ্গিও তাই বিশ্বকেন্দ্রিক হতে হবে। কিন্তু সমগ্র বিশ্বে ইসলাম প্রতিষ্ঠা একবারে হওয়া সম্ভব নয়, যেহেতু তা চিরকালই বিভিন্ন সার্বভৌমত্বের অধীনে খণ্ডিত অবস্থায় আছে। শেষ নবীর আনীত জীবনব্যবস্থাটি আকীদাগতভাবে সমস্ত দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠার নীতি হলো সামরিক। খেয়াল করলে দেখবেন, এ প্রসঙ্গে প্রতিবার এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী সমস্ত দুনিয়াতে শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এটা আসলে এমামুয্যামানের ব্যবহার না, আল্লাহ কোর’আনে ‘ফিল আরদ’ কথাটি ব্যবহার করেছেন। সমগ্র পৃথিবীতে, সকল জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে কেবল ইসলামই নয়, যে কোনো আদর্শ বা জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে গেলে এই সামরিক নীতি গ্রহণ করতে হয়েছে, সেটা সাম্যবাদই হোক, রাজতন্ত্রই হোক বা গণতন্ত্রই হোক। প্রচার দ্বারা, যুক্তিতর্ক দ্বারা মাহাত্ম্য বর্ণনা করে হয়তো একটি ব্যবস্থা একটা নির্দিষ্ট অঞ্চলে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হতে পারে, কিন্তু সমস্ত দুনিয়া জুড়ে, উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিমের সমস্ত জনপদে, পাহাড়ে, সমতলে, মরুভূমি-বনাঞ্চল-দ্বীপাঞ্চলের মানুষকে একটি সিস্টেমে আনতে হলে সেটা প্রচারের দ্বারা অসম্ভব। পৃথিবীর যে সমস্ত দেশে গণতন্ত্র নেই সেখানে পশ্চিমারা গণতন্ত্র আনার নামে সামরিক নীতিই প্রয়োগ করছে। বলতে পারেন এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। তবে প্রচারের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও জনসাধারণকে মোটিভেট করেও কিছু কিছু এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। উদাহরণ: মদীনা। অন্য অনেক এলাকাতেও পরবর্তীতে বিনা যুদ্ধে ইসলাম (শান্তি) প্রতিষ্ঠা করা গেছে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যুদ্ধ হয়েছে। তাই ইসলাম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সামরিক পদক্ষেপের গুরুত্ব কোনো মুসলিম বা সত্যনিষ্ঠ মানুষ অস্বীকার করতে পারবে না, করলে সে কাফের হয়ে যাবে। কারণ আল্লাহ এটি কোর’আনে বলেছেন। সমস্ত পৃথিবীতে যতক্ষণ একটি মানুষও কষ্টে থাকবে, একটি জনপদেও ফেতনা থাকবে ততক্ষণ উম্মতে মোহাম্মদীর উপর স্রষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব শেষ হবে না। এই সত্যটিই এমামুয্যামান তাঁর বইতে তুলে ধরেছেন। সকল নবী ও রসুল এসেছেন মানুষকে অশান্তি থেকে মুক্তি দিতে, তাঁদের জাতির উপরেও সেই একই দায়িত্ব বর্তায়। বিশ্বের যে কোনো অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় ঘটলে এ কারণেই জাতিসংঘসহ অন্যান্য শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোও হস্তক্ষেপ করে, প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপও নেয়, (যদিও তাদের মূল উদ্দেশ্য ভিন্ন)। সুতরাং শান্তির লক্ষ্যে যুদ্ধ সর্বযুগে কর্তব্য বলে স্বীকৃত।

আল্লাহ বলেছেন, সমস্ত পৃথিবীতে সশস্ত্র সংগ্রাম কর যতক্ষণ না ফেতনা দূর হয়ে দীন (শান্তিময় জীবনব্যবস্থা যা ফেতনার বিপরীত) প্রতিষ্ঠিত হয় (সুরা আনফাল ৩৯)। কাজেই এমামুয্যামান বইতে যে কথাটি বলেছেন, এর তাৎপর্য হলো একটা অঞ্চল না, একটা এলাকাতে না, সমস্ত দুনিয়াময় ন্যায় সত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে, এবং তা সম্পূর্ণরূপে করতে হলে সামরিক ছাড়া আর কোনো ভাবে সম্ভব নয়। আপনি আলোচনা করে মাহাত্ম্য বর্ণনা করে, যুক্তি দিয়ে বই লিখে হয়ত একটি নির্দিষ্ট কিছু লোককে এই সত্যের পথে আনতে পারবেন, কিন্তু সমস্ত দুনিয়ার মানুষকে আনা অসম্ভব। পৃথিবীর কোন মতবাদ এই পর্যন্ত তা পারে নি। সেই জন্য আল্লাহ অতি প্রাকৃতিক, অতি যৌক্তিক এই নীতিটি শান্তি প্রতিষ্ঠার মিশনে উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য নির্ধারণ করেছেন আর এমামুয্যামান সেটাই উল্লেখ করেছেন। যারা ইসলামের যুদ্ধকে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বলে অপপ্রচার করে, তিনি অকাট্য যুক্তি দিয়ে তাদের দাবিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছেন।

শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সহিংস পন্থায় বহুদূর যাওয়া যায়, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত যাওয়া যায় না। যেমন ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু এদেশের অধিকাংশ লোকের সমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তাকে প্রধানমন্ত্রিত্ব দেয়া হয় নাই। অবশেষে পুরো জাতির ঐক্যবদ্ধ সামরিক মোকাবেলার দ্বারাই পাকিস্তানকে পরাভূত করা গেছে। এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে। আমি যেটা বুঝানোর চেষ্টা করছি যে, সমস্ত দুনিয়াময় একটা জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হলে শেষ পর্যন্ত সামরিক নীতি লাগবে। কারণ একটি ছোট এলাকা হলে কথা ছিল, বিষয়টা সারা দুনিয়ার। পুরো দুনিয়াবাসীকে আলোচনা করে, বুঝিয়ে শুনিয়ে একটি সিস্টেমের মধ্যে আনতে পারবে না, মুখের কথায় এত বড় কাজ হবে না, এটা অসম্ভব। কারণ অধিকাংশ মানুষই তাদের অভ্যস্ত বিশ্বাসের প্রতি যুক্তিহীন ও অন্ধ থাকে। বুদ্ধি বিবেচনা দিয়ে একটি আদর্শকে সবাই মেনে নেয় না। বিশেষ করে রাষ্ট্রক্ষমতা কেউ বিনা যুদ্ধে ছেড়ে দেয় না। পুরো জনগোষ্ঠী ইন্টেলেচুয়াল হলে একটা কথা ছিল। তাই পৃথিবীর সমস্ত আদর্শ যথা গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, সবকিছুই সামরিক পন্থাতেই বিজয় লাভ করছে। কাজেই এটা একটি প্রাকৃতিক নীতি, এটা ইসলামেরও নীতি। ইসলামের একটি নাম তাই দীনুল ফিতরাহ বা প্রকৃতিনির্ভর জীবনব্যবস্থা। এই সত্যকে কোনো সত্যনিষ্ঠ মানুষ অস্বীকার করতে পারবে না।

Sign in to Reply
Replying as Submit

Leave a Reply